বজ্রপাত কিভাবে তৈরি হয়? বাঁচতে যা করবেন …

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে বজ্রপাতের হার সঙ্গে মৃত্যুর হারও । বজ্রপাত থেকে রক্ষার বড় উপায় হলো জানা ও সচেতনতা ।

বজ্রপাতের সময় নারকীয় বিদ্যুৎ ও তাপ তৈরি হয় । আর্দ্র বায়ু যখন সূর্যের তাপে উষ্ণ হয়ে উপরে উঠে আসে তখন শীতল বাতাসের সংস্পর্শে এসে মেঘে পরিনত হয় । এই মেঘগুলির একে অপরের সংঘর্ষিক অবস্থায় থাকে যার কারনে মেঘের মাঝে বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি হয়। কিন্তু এই চার্জগুলি মেঘের উপরিভাগে ধনাত্মক এবং নিচের দিকে ঋণাত্মক আকারে বিন্যাস্ত থাকে যার কারনে চার্জ পার্থক্য থাকে বিশাল । একই সময়ে মেঘের নীচে মাটিতে ধনাত্মক চার্জ তৈরি হয়। মেঘের মধ্যেকার চার্জ পার্থক্য এবং মেঘ ও ভূ-পৃষ্ঠের মাঝের তখনকার বিশাল বিভব (ভোল্ট) পার্থক্যের কারনে সৃষ্টি হয় বজ্রপাত। স্থলভাগের ধনাত্মক চার্জগুলি লম্বা বস্তু (অর্থাৎ গাছ, ঘর) বেঁয়ে মেঘের চার্জের সাথে সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিদ্যুতিক সার্কিট তৈরি করে আর সেইসঙ্গেই শুরু হয় নারকীয় বিদ্যুৎ ও তাপের চলাচল । বজ্রপাতের সময় প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ উৎপন্ন হয় | এই তাপের কারণে খুবই সরু রেখা বরাবর আশে-পাশের বাতাস খুবই দ্রুতগতিতে প্রসারিত হয় বলে আমরা বজ্রনাদ বা মেঘের গর্জন শুনতে পাই।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাতের পরিমান বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, জলবায়ু মডেল ফলাফল বলছে ১০% বৃদ্ধি পাবে প্রতি ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়ার কারনে | প্রতি বছর আমাদের দেশে অনেক মানুষ বজ্রপাতের কারনে মারা যায় । ২০১০ সালে বিশ্বের চার ভাগের ১ ভাগ বজ্রপাত সম্পর্কিত মৃত্যু হয়েছিল বাংলাদেশে, যা কিনা অন্যান্য বছরেও মোটামুটিভাবে অনুরূপ | সচেতনতা বাড়ালে মৃত্যুর পরিমান অনেক কমানো যাবে |আমাদের দেশে এব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে | 

হঠা করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বাবা-মা তার বাচ্চাদের নিয়ে উচু গাছ থেকে দূরে মাটিতে শুয়ে বজ্রপাত থেকে বাঁচতে চাচ্ছে | (শিশুদের গল্পের বই থেকে) 

বজ্রপাতের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাই উত্তম । গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে মেঘের গর্জন শুনা গেলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। বজ্রসহ বৃষ্টির সময় ধাতব বস্তুর কাছে না থাকাই শ্রেয়। দালানে বজ্র নিরোধক দন্ড লাগানো উচিত । বজ্রপাতের সময় বাড়িতে ঘরের মধ্যে থাকুন, উঁচু খোলা স্থান, যেমন ছাদে, ওঠা থেকে দূরে থাকুন।

বজ্রপাতের সময় কোনভাবেই মাঠে যাওয়া, নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া, গরু আনতে মাঠে যাওয়া কিংবা বাচ্চাদের মাঠে খেলতে দেয়া যাবেনা। ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা কিংবা বড় গাছের নীচে দাঁড়ানোও বিপজ্জনক। বজ্রপাত শুরু হয়ে গেলে ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে না থেকে কিংবা দৌড়াদুড়ি না করে ফাঁকা জায়গাতেই মাটিতে শুয়ে পরা উচিত ।

লেখকঃ মোহ বাঙ্গালি [আপনি যদি এই সম্পর্কে আরো পড়তে চান এখানে একটা অবলম্বিত তথ্যসূত্র]

About সময় চাকা

আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত কিছু বাংলাদেশী। সময়ের চাকায় আমরা চলেছি সুখের সন্ধানে, সেই প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আজও চলছে সন্ধান আর অনুসন্ধান । তাই চলুন সময়ের চাকায় পিষ্ট না হয়ে, সময় চাকা ধরে চলতে থাকি, সময়কে সুন্দর করে রাখার আশায়…

One thought on “বজ্রপাত কিভাবে তৈরি হয়? বাঁচতে যা করবেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *